হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায়। কি খেলে খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়

হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায়। কি খেলে খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়। হজমের ট্যাবলেট কি। হজমের সমস্যা হলে কি হয়।

হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায়। কি খেলে খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়


পেট মানুষের সুস্থ থাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ, যা সুস্থ থাকলে সমগ্র শরীর সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।

আমরা  দৈনন্দিন যে খাবারগুলো খেয়ে থাকি, তা যদি সঠিকভাবে হজম না হয় তাহলে আমাদের পেটে অনেক প্রকার সমস্যার তৈরি হয়।

যার কারণে খাবারের পুষ্টিগুণ  আমাদের শরীরে পৌঁছায় না, বরং পেটে দেখা দেয় বহু জাতীয় সমস্যা।

খাদ্য হজম না হলে পেটে কি কি সমস্যা হয়।

মূলত খাবার হজম না হলে পেটের ভিতর যে সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে যেমন, ডায়রিয়া, এসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য, স্থূলতা, অরুচি, অপুষ্টিসহ নানাবিধ সমস্যা।

তাই দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ থাকতে হলে খাবার হজম হওয়া অত্যন্ত জরুরী।

হজম শক্তি বাড়ানোর উপায়।

সাধারণত হজম শক্তি ব্যক্তি বিশেষ ভিন্ন হয়ে থাকে, আপনার যদি হজম শক্তি সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে কিছু স্বাভাবিক নিয়ম ফলো করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায় গুলো।

খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া।

খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে, খাবার যেহেতু ভালোভাবে চিবিয়ে খাবেন তার জন্য খাবার হজম হওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে,

যিনি যত খাবার চিবিয়ে খান তার পাচকরস নিঃসরণ তত ভাল হয়। 

এসব পাচকরস খাবার কে নিমিষেই হজম করতে সাহায্য করে।

তাই সহজেই খাবার কে হজম করতে খাবারের সময় খেয়াল রাখতে হবে খাবার যেন নিখুঁতভাবে চিবিয়ে খাওয়া হয়।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে লেবু।

আমরা যখন খাবার খাই খাবারের সাথে আমরা লেবু খেতে পারি লেবু একদিকে যেমন খাবারের রুচি বাড়ায় ঠিক তেমনি খাবার হজমে সাহায্য করে।

লেবু পেটের অনেক রোগ সারিয়ে তোলে পাশাপাশি খাবারের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করে।

ডাক্তারদের মতামত হলো তিন বেলা খাবারের সাথে লেবুর রাখা হজম শক্তির জন্য উপকারী।

লেবু খুব সহজে খাবার হজম করে চাইলে খাবারের পরে লেবুর রস পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার।

যাদের হজম শক্তি একেবারেই কম তারা নিয়মিত খাবারের সাথে ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেতে পারেন যেমন পালং শাক, ডাটা শাক, পুঁই শাক, আশ জাতীয়  খাবার, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করে।

ক্যালসিয়াম যুক্ত শাকসবজি না খেতে পারলে খাবারের শেষে হালকা করে দুধ খেতে পারেন দুধে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, যা আপনার খাবারকে হজম করতে সাহায্য করে।

দুধের উপকারিতা বলে শেষ করার মত নয়, দুধ মেধা শক্তি বৃদ্ধি করে, কাজে মানুষকে শক্তিশালী করে তোলে, পাশাপাশি ক্ষুধা নিবারণ করতেও দুধের মত অন্য কোন খাবার নেই।

দই হজম শক্তি বৃদ্ধিতে উপকারী।

দুধের বিকল্প হিসেবে হজমশক্তি বৃদ্ধিতে আপনারা দই খেতে পারেন।

দুধ নানাবিধ  সমস্যার কারণে খেতে না পারলে অথবা পাওয়া না গেলে  দই খেতে পারেন। হজম শক্তি বৃদ্ধিতে দই খুবই সহায়ক।

এতে  জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণে র পাশাপাশি হজম শক্তিতে অনেক সাহায্য করে।

গ্রিন টি অথবা পুদিনা পাতার চা।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে দিনে দুইবার গ্রিন টি দিয়ে চা অথবা পুদিনা পাতার মিক্স করে চা পান করতে পারেন।

এতে রয়েছে আ্যন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান যা খাবার হজম করতে বেশ উপকারী।

গ্রিন টি মূলত আমরা একটি সুস্বাদু খাবার হিসেবে ই চিনে থাকি, কিন্তু এটি শরীরের জন্য ও হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য অনেক উপকারী একটি খাবার।

দৈনিক আঁশযুক্ত খাবার খান।

আপনার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন আশযুক্ত খাবার রাখতে হবে। আশযুক্ত খাবার সহজেই পানি শোষণ করে, ফলে খাবার দ্রুত হজম হয়ে যায়।

নিয়মিত খাবারের সাথে শাকসবজি, ফল, সালাদ, চিয়া সিড, ইসবগুল, তোকমা, খেতে পারেন।

পানির পরিমাণ বেশি রয়েছে এমন ফল ও সবজি যেমন:- তরমুজ, বাঙ্গি, শসা, টমেটো, লাউ, ইত্যাদি সহ খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা।

পানি ছাড়া কোন খাবারেই সঠিকভাবে হজম হয় না। হজম শক্তি বৃদ্ধিতে দৈনিক 10 থেকে 12 ক্লাস পানি পান করুন। তবে খাবারের আগে এবং খাবারের মাঝে অতিরক্ত পানি পান করা যাবে না, এতে বদহজম হয়।

সঠিক সময় খাবার খাওয়া।

হজম শক্তির আরেকটি মূল কারণ হলো সঠিক সময় খাবার খাওয়া, যারা সঠিক সময় খাবার খান না তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে।

বিশেষ করে রাতের খাবার সাতটা থেকে নয়টা এর ভিতর খেতে হবে গভীর রাতে কোনভাবেই খাবার খাওয়া যাবে না।

আরেকটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হল খাবার খেয়েই সাথে সাথে ঘুমানো যাবে না, ঘুমানোর জন্য বিছানায় যাওয়ার কমপক্ষে ২ ঘন্টা আগে খাবার খান।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে নিয়মিত ব্যায়াম।

নিয়মিত ব্যায়াম করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। সারাদিনে কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। যেমন হাঁটাহাঁটি, জগিং, সাইকেল চালানো, বিশেষ করে পেটে চাপ পড়ে এমন ব্যায়াম করা।
এমন ব্যায়াম করলে হজম শক্তি ত্বরান্বিত হয়, শরীরের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ও জরুরী, এতে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহ হয়।

ভালো ঘুম

সারাদিনে ৭-৮ ঘন্টা ঘুম শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পাশাপাশি হজম শক্তিতেও রয়েছে উপকার তাই দিনে ৭-৮ ঘন্টা ভালোভাবে ঘুমান। দশটার ভিতরে ঘুমিয়ে পড়া এবং সকালে ওঠার অভ্যাস করা। এটা হজম শক্তির জন্য কার্যকারী।

মানসিক চাপমুক্ত থাকা।

শরীর এবং মস্তিষ্কের জন্য মানসিক চাপ এড়িয়ে চলা দরকার সাথে সাথে হজম শক্তির জন্য মানসিক চাপ এড়িয়ে চলা প্রয়োজনীয়। তাই যে কোন মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন।

তেল,ঝাল,মসলাযুক্ত, খাবার কম খাওয়া।

এটা পেটের রোগের জন্য এবং গ্যাস্ট্রিকের জন্য এড়িয়ে চলা খুব প্রয়োজনীয় তেল ঝাল মসলাযুক্ত খাবার হজমে গন্ডগোল করে।
তাই কম তেল কম ঝাল দিয়ে খাবার খান মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।

ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।

ধূমপান শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর, ধুমপান করলে আপনার হজম শক্তিতেও প্রভাব ফেলে, যার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য বেড়ে যায়, মূলত আমাদের পেটের রোগ থেকে শরীরের নব্বই শতাংশ রোগ হয়ে থাকে। তাই পেটকে সুস্থ থাকতে উল্লিখিত নিয়ম গুলো মেনে চলুন।

মনে রাখবেন অনলাইনে পরামর্শ দেওয়া যায় চিকিৎসা নয়। পেটে অতিরিক্ত সমস্যা ভোগ করলে রেজিস্টার ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

অন্য পোস্ট পড়ুন: হজমশক্তি বাড়াতে যা খাবেন

Previous Post Next Post